ছাত্রলীগ আবারো এক নারীর বস্ত্রহরন করেছে টি এস সি তে। এই সংবাদে সামাজিক মাধ্যম বলা যেতে পারে তোলপাড়। কিন্তু আমার কাছে কিংবা আমার মতা আরো যারা রয়েছেন তারা এতে করে বিষ্মিত হন নি। বিষ্মিত হবার আর কি-ই বা রয়েছে? একের পর এক ছাত্রলীগের ইতরামি, ফাতরামি আর নোংরামি সব মিলে এখন একাকার।
ছাত্রলীগের বস্ত্রহরণ করাটা কোনো খবর না, জনসম্মুখে ধর্ষণ করলে বড়জোর শেষ পাতায় মাটির নীচে খুড়ে সংবাদখানা পেতে পারেন। চল্লিশ মিনিটও ব্যাপার না, চল্লিশ দিন ধরে চলতে পারে বস্ত্রহরণ। বাংলাদেশের কেবলমাত্র একটি পরিবারের সদস্যদের মানসম্মান আছে – যতোক্ষণ সেই পরিবারের কারো শ্লীলতাহানি না হচ্ছে ততোক্ষণ শ্লীলতাহানি বলে কিছু নেই দেশে, কাপড় খুলে ন্যাংটা করা মানে শ্লীলতাযোগ করা।
ছাত্রলীগের হাতের কাজের দোহাই দিয়ে বাঙালি আরবান এলিট রাস্তায় হেঁটে যাওয়া প্রায়-ফর্সা যেকোনো-যখনি নারীদের দ্রৌপদী হিসেবে দেখতে উন্মুখ: ছাত্রলীগ ছুঁয়ে দিলে দিব্যি আমার – তুমিও দ্রৌপদী। তারা জোড় করে বোরখা পরানোর চেষ্টায় দেশের সর্বনাশ দেখতে পান কিন্তু একজন নারীকে সর্বসম্মুখে কাপড় খুলে শ্লীলতাহানি করলে “দুষ্টু সব নচ্ছার ছেলের দল” বলেই ক্ষোভ প্রশমন করে ফেলতে পারেন। এখনো যে ঢাকাই আরবান এলিটরা মেয়েটাকেই আসল দোষী বলে সব্যস্ত করেন নি সেটাই অবাক করা ব্যাপার: কী দরকার ছিলো বাবা তোমার ছাত্রলীগের সামনে দিয়ে যাওয়ার? তোমার কি জানা নেই মেয়ে যে তোমাকে দেখলেই লীগের দাড়িয়ে যায়?
এসব তো পুরোনো কেচ্ছা – সবারই জানা।
বিস্ময়ের বিষয় হোলো পুলিশ সামনে দাড়িয়েও থেকেও কিছু করে নি। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর কাছে থেকে লোকজন ডাকাডাকি করলেও তারা এগিয়ে আসে নি। বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যরা অবশ্য ব্যস্ত ধরনের ফিলোসফার। তারা বাংলাদেশে যে আইন নাই সে আইন থাকলে ফেসবুকে স্টেটাস দেয়ার অপরাধে একজন গোবেচারা টাইপ শিক্ষককে কীভাবে কোমরে দড়ি দিয়ে সাইজ করা যায় সে চিন্তায় মশগুল। তাই চোখের সামনে ঘটে যাওয়া অপরাধে (যার বিচার বাংলাদেশের পেনাল কোডে খুব পরিষ্কারভাবে লেখা আছে) হুশ প্রক্ষেপ করতে পারেন না। না পারারই কথা। মহান শেখ হাসিনার ফু দেয়া ছাত্রলীগের পেটোয়া বাহিনী বলে কথা। তারা দুর্বলের ওপর দোর্দন্ড আর ক্ষমতাবানের সামনে পোষা বুটচোষা।
ছাত্র ইউনিয়নের যে ছেলেরা মেয়েটিকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলো তাদের লাল সালাম। দেশে মানুষ আছে জানলে আস্থা পাই।