একান্ত ভাবনা

ভালোবাসার ক্ষেত্রে বৈধ বা অবৈধ বলে কিচ্ছু নেই

যে প্রেমিকেরা কথায় কথায় প্রেমিকাদের বলেন- তোমার হাসি মোনালিসা’র মতন তারাই যখন সমকামিতা নিয়ে কঠিন কঠিন কথা লিখে স্ট্যাটাস দেয় তখন আমার খুব হাসি পায়! লিওনার্দো যে সমকামী ছিলেন তা তো তাদের অজানা হওয়ার কথা নয়? প্রাচীন মিশরীয়, অসিরিয় এমনকি বাংলা’র ইতিহাসেও সমকামিতা সেই প্রাচীনকাল থেকেই ছিল।

আবার অনেকেই বলে থাকেন সমকামিতা নাকি প্রকৃতিবিরূদ্ধ। সমকামীরাও প্রকৃতির অংশ। বিড়াল, কুকুর, ছাগল, সিংহ, র‍্যাকুন, হাতি, ডলফিন, স্যা’মন মাছ, বাইসন, কোয়ালা বেয়ার, ব্রাউন বেয়ার, মুরগী, পেঙ্গুইন, সি-গাল, উড টার্টেল, গার্টার সাপ সহ আরো পাঁচশ প্রজাতির প্রাণীর মতো সমকামীরাও প্রকৃতিরই অংশ।

আবার অনেকে বলেন সমকামিতা নাকি নোংরা। এটি আসলে মানুষ-ভেদে তার মনমানসিকতার পরিচয়। কারন সমকামীতা যদি নোংরা হয়, তাহলে ছেলে-মেয়ের যৌন সঙ্গমও নোংরামি। কই, তখন তো কিছু বলেন না?

অনেকে আবার ধারনা করেন যে সমকামিতা একধরণের মানসিক রোগ। জ্বী না। আপনি যে সমকামীদের সমাজে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারছেন না, সেটা আপনার মানসিক সমস্যা। আপনার ডগমাটিক ধর্মের “মূল্যবোধ” থেকে আপনার ট্যাবুকে আপনি বের করতে পারছেন না। এছাড়া আর কিছুই না।

অনেকেই বলতে শোনা যায় “পৃথিবীতে সবাই সমকামী হইলে রিপ্রোডাকশান করবে কে?”। কিন্তু কেন? সমকামীরা কি বিষমকামীদের খুন করে মেরে ফেলছে? সমকামীরা তো এই পৃথিবীতে সংখ্যালঘু, তাঁরা তো বিষমকামীদের কোনভাবে বিরক্ত করছেন বলে জানা যায়নি আজ পর্যন্ত! যেসব ছেলেরা মেয়েদের ভালোবাসেন, এবং যেইসব মেয়েরা ছেলেদের, তারাই দুনিয়াতে বাচ্চা সাপ্লাই দিবেন। দুনিয়াতে বাঘ আছে বলে কি সিংহের দরকার নাই?

আসলে ভালোবাসা হলো একটি পবিত্র অনুভূতি, এ ক্ষেত্রে বৈধ বা অবৈধ বলে কিচ্ছু নেই!