পাভলভ নামে এক বড় মনোবিজ্ঞানি ছিলেন । উনি বহু বছর গবেষণা করে দেখান যে প্রানি পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারনে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং সেই অনুযায়ি চলতে থাকে। এটাকে বলা হয় কন্ডিশন্ড রিফ্লেক্স এবং এই অবস্থায় সেই প্রানি যুক্তির বাছ বিচার করে না ।
উনার পরীক্ষায় ঘণ্টা বাজিয়ে তারপর খাবার দেয়া হত একটা কুকুরকে । এক সময়ে দেখা গেল কুকুরটা ঘন্টা দেখলেই জিভ বের করে লোল ফেলতে থাকে ।
এই যে মানসিক অবস্থা সৃষ্টি করা হল – যেই অবস্থায় বাস্তবতার বাইরে শুধু আরোপিত কারণে কুকুরের আচরণ নির্ধারিত হয়ে যাবে – সেই একই ঘটনা মানুষের ক্ষেত্রেও ঘটছে। আমরা ধর্ম , জাতিয়তাবোধ এইসব বিষয়ে কারণ বা বাস্তবতা না খুঁজেই শর্ত অনুযায়ি আচরণ করি ।
ছবিটা দেখুন , ভেড়ার পালকে একটা গেটের ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে – কিন্তু কোথাও কোন সীমানা বেড়া নেই। ভেড়াগুলি যেহেতু সীমানার বিষয়টিতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে , কাজেই শুধু মাত্র গেট দেখেই কল্পিত সীমানার মধ্যে আটকে গেছে ।
আফ্রিকা থেকে দুই ভাইকে ইউরোপের দুই পরিবারে দত্তক নেয়া হয়েছিল। এক ভাই প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টান পরিবারে থেকে প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টান আরেকভাই নাস্তিক পরিবারে থেকে নাস্তিক হয়েছে – অথচ তাদের দুজনের পিতামাতাই ছিল ক্যাথলিক খ্রিস্টান । বাংলাদেশের অনেক যুদ্ধ শিশু ইউরোপে আশ্রয় পেয়ে বড় হয়েছে – সম্পুর্ন নাস্তিক অথচ সেই শিশুর মা সম্ভবত হিন্দু ছিল আর বাবা ছিল এক পাকি হারামজাদা এবং অতি অবশ্যই মুসলমান ।
হিটলার হেসে হেসে বলেছিলেন , আমরা শাসকরা কি ভাগ্যবান, কারন মানুষ চিন্তা করে না । যদিও আমাদের সতর্ক করা হয়েছে যে মানুষ চিন্তা করতে শুরু করবে যে কোন সময়ে – কিন্তু আমরা সে সবের থোড়াই পরোয়া করি।
মানুষ কবে কল্পিত সীমানার বাঁধন ছিঁড়তে পারবে? কবে চিন্তা করতে শুরু করবে ?